
বাংলা স্টার অনলাইন-কাতার বিশ্বকাপে ফের আর্জেন্টিনার ত্রাতা রূপে হাজির হলেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় থাকা আর্জেন্টিনাকে দিশা দেখালেন ফুটবল জাদুঘর মেসিই। প্রথমার্ধের নিষ্প্রভতা কাটিয়ে স্বরূপে ফিরতেই চেহারা বদলে যায় আর্জেন্টিনার। তাতে মেক্সিকোকে হারিয়ে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট অর্জন করে শেষ ষোলোর সম্ভাবনা উজ্জ্বল করল আর্জেন্টিনা।
লুসাইল স্টেডিয়ামে শনিবার (২৬ নভেম্বর) লিওনেল মেসির দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভর করে মেক্সিকোকে ২-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে গোলশূন্যভাবে শেষ হওয়া খেলায় দ্বিতীয়ার্ধে প্রাণ এনে দেন মেসি। ৬৪ মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান মেসি। এরপর ৮৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এনজো ফার্নান্দেজ।
মেক্সিকোর বিপক্ষে ডু অর ডাই ম্যাচের প্রথমার্ধে সুবিধা করে উঠতে পারছিল না আর্জেন্টিনা। মেক্সিকোর হাই প্রেসিং ফুটবলের সামনে ব্যর্থ হচ্ছিল আর্জেন্টাইন মিডফিল্ড। বল পজেশনে এগিয়ে থাকলেও মেক্সিকোর রক্ষণভাগকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ব্যর্থ হয় মেসি-মারিয়ারা। মেক্সিকোর হাই প্রেসিং ফুটবলের সামনে আর্জেন্টিনার মিডফিল্ড সুবিধা করে উঠতে পারছিল না। বরং মেক্সিকোই এগিয়ে ছিল আক্রমণে।
ম্যাচের ১৯ মিনিটে বিপজ্জনক জায়গায় লোজানোকে ফেলে দেন ওটামেন্ডি। রেফারি ফ্রি কিকের বাঁশি বাজান। ফ্রিকিক থেকে গোলরক্ষক এমি মার্টিনেজের ভালো পরীক্ষা নেয় মেক্সিকো। ২১ মিনিটে আকুনাকে বিপজ্জনকভাবে বাধা দিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন মেক্সিকোর নেস্তর আরাউহো।
২৭ মিনিটে ডি বক্সে দারুণ একটা ক্রস বাড়ান আকুনা, কিন্তু মেসির হেড চলে যায় গোলপোস্টের অনেক ওপর দিয়ে। অবশ্য তার আগেই রেফারি বাজান ফাউলের বাঁশি। ক্রস নেয়ার আগে মেক্সিকান মার্কারের পা মাড়িয়ে দিয়েছিলেন আকুনা।
৩২ মিনিটে ডি পলকে ফেলে দিলে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। কর্নারের কাছাকাছি দুরূহ কোণ থেকে মেসির নেয়া ফ্রিকিক রুখে দেন মেক্সিকান গোলরক্ষক ওচোয়া।
৪০ মিনিটে কর্নার থেকে ডি পল বল দেন ডি মারিয়াকে। ডি মারিয়ার ক্রসে হেড নিলেও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি লাউতারো মার্টিনেজ। ৪৩ মিনিটে ফের বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি কিক পায় মেক্সিকো।
দ্বিতীয়ার্ধের ৪৯ মিনিটের মাথায় ডি বক্সের ঠিক বাইরে মেসিকে ফেলে দেয় মেক্সিকোর ডিফেন্ডাররা। বিপজ্জনক জায়গা থেকে মেসির ফ্রি কিক গোলবার উঁচিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে। ৫৫ মিনিটে মেক্সিকোর ডি বক্সে ঐক্যবদ্ধ আক্রমণ শানায় আর্জেন্টিনা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাল খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয় তারা।
৫৭ মিনিটে গুইডো রদ্রিগেজকে তুলে এনজো ফার্নান্দেজকে নামান কোচ স্ক্যালোনি। ফার্নান্দেজ নামার পর আর্জেন্টিনার মিডফিল্ড গতি খুঁজে পায়।
মেক্সিকোর রক্ষণভাগে ক্রমাগত চাপ তৈরি করতে থাকেন মেসি-ফার্নান্দেজরা। তবে অ্যাাটকিং থার্ডে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ছিল আর্জেন্টিনার সব চেষ্টা। ৬২ মিনিটে জোড়া খেলোয়াড় বদল করেন স্ক্যালোনি। লাউতারো মার্টিনেজ ও মন্তিয়েলকে তুলে আলভারেজ ও মলিনাকে নামান।
৬৯ মিনিটে আরেকটি সুযোগ নষ্ট করেন মলিনা। ডি বক্সের বাইরে থেকে উড়িয়ে মারেন বল। ৭৬মিনিটে মাঝমাঠে বল পেয়ে আলভারেজ লম্বা দৌড় দেন। ডি বক্সে ঢুকে মেসির উদ্দেশ্যে পাস দিলেও মেসি তা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার আগেই ক্লিয়ার করে মেক্সিকান ডিফেন্ডার।
প্রথমার্ধে নিষ্প্রভ লিওনেল মেসি জ্বলে উঠেন দ্বিতীয়ার্ধে। ৬৪ মিনিটে মেক্সিকান ডি বক্সের বাইরে বল পেয়ে দূরপাল্লার শটে পরাস্ত করলেন মেক্সিকান গোলরক্ষক ওচোয়াকে। ডি মারিয়ার পাস থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে টিকিয়ে রাখলেন বিশ্বকাপে।