
বাংলা স্টার অনলাইন ডেস্ক-যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, ‘নেতাকর্মীদের প্রতি শেখ মণির ছিল গভীর প্রেম ও মমত্ববোধ। মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, সাংবাদিক ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুর্নগঠন নিয়ে তিনি বেশ ভাবতেন। বাবা বাংলাদেশে একটা জ্ঞানভিত্তিক, প্রগতিশীল, বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। যে কারণে আমি আমার বাবাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি গর্ববোধ করি সেটা হলো, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা’।
৪ ডিসেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুজিব বাহিনীর প্রধান, শহীদ শেখ ফজলুল হক মণির ৮৪ তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভায় একথা বলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান।
উক্ত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন-বিশিষ্ট সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল। সভাপতিত্ব করেন- বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। সঞ্চালনা করেন-সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ‘শেখ মণি আমাদের কাছে বিশ্বস্ততার প্রতীক। ১৫ আগস্টের প্রথম শহীদ হিসাবে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে শেখ মণি আনুগত্য ও বীরত্বের অবিনশ্বর উদাহরণ রেখে গেছেন যা ৫ দশক পরও যুব সমাজের কাছে পথপ্রদর্শক হয়ে আছে। শেখ ফজলুল হক মণির অনুসারী এবং সংগঠনের কর্মী হিসাবে আমরাও গর্বের সাথে বুক চাপিয়ে বলতে পারি, ‘যুবলীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্য সর্বোচ্চ আত্মহুতি দিতে প্রস্তুত।’
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভাবঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা
‘শেখ মণি উপলব্ধি করতেন একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং ন্যায়বিচার সম্পন্ন জাতিরাষ্ট্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নাই। ঠিক একই ভাবে শেখ মণির উত্তরসূরি হিসেবে আমরা আজকের যুবলীগ মনে করি, একটি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, উন্নয়নশীল এবং আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নাই। ’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমি যতটুকু হয়েছি তার সবচেয়ে অবদান শেখ ফজলুল হক মণি ভাইয়ের। উনি শুধু নেতা ছিলেন না, নেতা তৈরি করতেন। আমার সৌভাগ্য তার সঙ্গ পেয়েছিলাম’।
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ মণি ভাইয়ের হাত ধরে ছাত্রলীগের সদস্য হয়েছিলাম। আমি যখন ১৯৬১ সালে বরিশাল বিএম কলেজের ছাত্র তখন তিনি কলেজে এসেছিলেন। তিনি তখন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মণি ভাই আমাকে বললেন, ‘তুই ছাত্রলীগ কর। ’ যদি মণি ভাইয়ের সংস্পর্শ না পেতাম তাহলে ডাকসুর ভিপি, ছাত্রলীগের সভাপতি, কিছুই হতে পারতাম না। সবই মণি ভাইয়ের অবদান। মণি ভাই মস্ত বড় সংগঠক ছিলেন। একজন আদর্শিক নেতা ছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা ৭ মার্চ রেসকোর্সে সভা করেছি, আমাদের নানা আন্দোলনে বড় বড় সভা করেছি। অথচ এখন বিএনপি বলে তাদের পল্টনে সভা করতে দিতে হবে। কারণ ওখানে মাত্র ২০-৩০ হাজার লোক হলেই মঞ্চ ভরে যায়।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি সমাবেশের অনুমোদনের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা অনুমতি দিয়েছি, ছাত্রলীগের সমাবেশ ২ দিন এগিয়ে নিয়েছি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছেড়ে দিয়েছি। বিএনপি সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা করবে এটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুবলীগ সর্তক থাকবেন। যাতে কেউ দেশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। মির্জা ফখরুল ইসলাম কথায় কথায় সরকারের পতনের কথা বলে। সরকার পতন এতো সহজ নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তৃণমূলে বিস্তৃত।
সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুজিব বাহিনীর প্রধান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি ছিলেন একজন প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিপথগামী যুবসমাজের পথ প্রদর্শক। শেখ মণি’র চেতনায় ও আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে যুবলীগ দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে। খুনি জিয়ার ষড়যন্ত্রে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিপথগামী কিছু ঘাতক সেনা সদস্য শেখ মণিসহ বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টের খুনিদের বিভিন্নভাবে পুণর্বাসন করেছিলেন। আজ যখন বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে ঠিক সেই সময় খুনি জিয়ার কুলাঙ্গার সন্তান তারেক রহমান লন্ডনে বসে দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিএনপি-জামাত বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মামুনুর রশীদ, মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. নবী নেওয়াজ, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, মো. জসিম মাতুব্বর, মো. আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, জহির উদ্দিন খসরু, সোহেল পারভেজ, মশিউর রহমান চপল, ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম মিল্টন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো শামছুল আলম অনিক।