29 C
Bangladesh
Saturday, June 3, 2023
spot_img

বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগে দুই মাসে ৩২৮ শিশুর মৃত্যু

বাংলা স্টার নিজস্ব প্রতিবেদক-ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে বেশ ঠান্ডা পড়েছে। বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। সবচেয়ে বেশি ভুগছে নবজাতক ও শিশুরাঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে বেশ ঠান্ডা পড়েছে। বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। সবচেয়ে বেশি ভুগছে নবজাতক ও শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীতে এখনো শীত শুরু হয়নি। তবে ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে বেশ ঠান্ডা পড়েছে। যার প্রভাব পড়ছে নবজাতক ও শিশুদের ওপর। গত দুই মাসে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ৩২৮ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য দিয়েছে। আর ঠান্ডার সময় শিশুদের দিকে বাড়তি নজর দিতে পরামর্শ দিয়েছেন শিশুবিশেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগ নিয়ে গত অক্টোবর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় অর্ধলক্ষ শিশু সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে চলতি ডিসেম্বরের মাসের প্রথম চার দিনেই ভর্তি হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার শিশু রোগী। আর অক্টোবরে ১৩ হাজার ৩৪৫ জন এবং নভেম্বরে ১৭ হাজার ৫২ জন।
আজকের পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

অঞ্চল হিসেবে সবচেয়ে বেশি সাড়ে ১০ হাজার রোগী চট্টগ্রাম বিভাগে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় সাড়ে ৫ হাজার রোগী সিলেট বিভাগে। সবচেয়ে কম খুলনা বিভাগে। এসব শিশুর মধ্যে মারা গেছে ৩২৮। এর মধ্যে অক্টোবরে ১৪৩ জন এবং নভেম্বরে ১৭৬ জন। আর গত রোববার পর্যন্ত এ মাসে মারা গেছে ৯ জন। সবচেয়ে বেশি ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে।

ঢাকা শিশু হাসপাতালে গতকাল সোমবার সরেজমিনে জরুরি বিভাগে রোগীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অধিকাংশই শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াজনিত। প্রতিদিন হাজারের বেশি রোগী আসছে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে।

৮ মাসের রিয়াকে নিয়ে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছেন সাব্বির রহমান ও নুসরাত জাহান দম্পতি। আজকের পত্রিকাকে তাঁরা বলেন, হঠাৎ করেই গত শুক্রবার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। স্থানীয় ফার্মেসি থেকে সিরাপ এনে খাওয়ানো হলেও অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের দেওয়া তথ্যমতে, গত মাসে শুধু নিউমোনিয়া নিয়ে ৩০৯ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। চলতি মাসে ভর্তি হয়েছে ৫১ জন। নভেম্বরে হাসপাতালটিতে ১৫৩ জন ভর্তি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। চলতি ডিসেম্বরের প্রথম চার দিনেই এই সংখ্যা ২৬ জন। তবে এর মধ্যে কতজন নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার মতো রোগে মারা গেছে, সেই তথ্য নেই তাদের কাছে।

হাসপাতালটির রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. কামরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে যেসব রোগী আসছে তাদের সিংহভাগই ঠান্ডাজনিত। শীতের প্রকোপ যত বাড়ছে, রোগীর আসার প্রবণতাও বেড়েছে।

ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে গত আট দিনে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৩ জন শিশু মারা গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৫ জন শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটিতে ৪৫০ জন রোগী ভর্তি ছিল।

৬০ শয্যার এই হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ায় ঠান্ডা নিয়েই অনেকে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছে।

শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, অভিভাবকের কাছে পরামর্শ থাকবে যেহেতু শীত পড়েছে তাই বাচ্চাদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। শিশুদের হাতমোজা, পা-মোজা সারাক্ষণ পরিয়ে রাখতে হবে।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডে গত পাঁচ দিনে ঠান্ডাজনিত রোগে ৪০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ জন। শনিবার বিকেলে আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,795FollowersFollow
20,800SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles