29 C
Bangladesh
Sunday, May 28, 2023
spot_img

দ্রুতগতিতে ছুটছে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা সেমিফাইনাল!

বাংলা স্টার রিপোট-একের পর এক প্রতিপক্ষকে হারিয়ে কাক্সিক্ষত গন্তব্যের দিকে দ্রুতগতিতে ছুটছে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। ব্রাজিলের স্বপ্ন, হেক্সা। মেসির হাতে বিশ্বকাপের ট্রফি দেখতে চায় আর্জেন্টিনা। দুই ফুটবল পরাশক্তির লক্ষ্য এক- বিশ্বকাপ ট্রফি জয়। ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে দুই দলের খেলার সম্ভাবনা কম। ফিকশ্চার অনুযায়ী কেবল একটা দলই সুযোগ পাবে স্বপ্নপূরণের। এর আগেই বিদায় নেবে যে কোনো এক দল! সব ঠিক থাকলে সেমিফাইনালে দেখা হবে ফুটবলের দুই পুরনো শত্রু ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার। যাদের প্রীতি ম্যাচ নিয়ে যেখানে ফুটবল বিশ্ব থাকে তোলপাড়! সেখানে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল! লোভাতুর চোখে সেই কাক্সিক্ষত দিনের পথ চেয়ে আছেন ফুটবলপ্রেমীরা। কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস। ব্রাজিল খেলবে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে। প্রতিপক্ষ হিসেবে সহজ নয় নেদারল্যান্ডস ও ক্রোয়েশিয়া। আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল সমর্থকরা এখন আর প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবছে কই! নীল-সাদা জার্সিতে আছেন লিওনেল মেসি। হলুদ জার্সিতে নেইমার। দুই তারকায় মুগ্ধ পুরো ফুটবল দুনিয়া। মুগ্ধ আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সমর্থকরাও। এতটাই মুগ্ধ, বিশ্বকাপের দেশ কাতারকে তারা নীল আর হলুদের রাজ্যে পরিণত করেছেন। চারদিকে শুধু আকাশি নীল-সাদা আর হলুদ জার্সির জয়গান। মেট্রোতে উঠলেই ওদের গলা ফাটানো চিৎকার শোনা যায়। সঙ্গে ধ্রিম, ধ্রিম ঢাক-ঢোল। কোথাও থেকে ভেসে আসে ভামোস আর্জেন্টিনা! ভামোস মেসি! কোথাও থেকে ব্রাজিল, ওলে ওলে ওলে। আর্জেন্টিনার ম্যাচ থাকলে কাতার পরিণত হয় আর্জেন্টিনায়। আকাশি নীল-সাদা জার্সিতে সয়লাব হয়ে যায় চারদিক। কোনো কোনো জার্সিতে থাকে লিওনেল মেসির ছবি। দিয়েগো ম্যারাডোনাও থাকেন অনেকের জার্সিতে। মাঠের গ্যালারিতে চারদিকে ম্যারাডোনা আর মেসি। ভ্রম হয়, ভুল করে আর্জেন্টিনায় চলে এলাম না তো! এমন ভুল আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনিরও হয়। ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে তিনি ভুলে যান, এটা পরদেশ। মাঝে মধ্যেই রেফারিদের সিদ্ধান্ত নিয়ে কিংবা শিষ্যদের ভুল পাস নিয়ে ক্ষেপে ওঠেন। মনে হয়, এটা বুঝি তার আপন ঠিকানা। স্কালোনি বলেই দিয়েছেন, ‘আমার মাঝে-মধ্যে মনে হয়, আমরা আর্জেন্টিনাতেই খেলছি। বুয়েন্স আয়ার্সে।’ ব্রাজিলের ক্ষেত্রেও কথাটা একই রকম। সিলেকাওদের ম্যাচের দিন স্টেডিয়ামের চারপাশে থাকে হলুদ জার্সির সয়লাব। ব্রাজিলের এক সিনিয়র সাংবাদিক বলছিলেন, ‘ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় সুবিধা কি জান! এই দলটার সমর্থনের অভাব হয় না। পৃথিবীর যে কোনো দেশে, যে কোনো মাঠকেই তারা নিজেদের হোম গ্রাউন্ড মনে করে খেলতে পারে।’ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে তার প্রমাণ দিয়েছে ব্রাজিলের সমর্থকরা। এ তো গেল ম্যাচের দিনের কথা। দুই দলের ম্যাচ না থাকলে তারা অন্যদের ম্যাচে ভিড় জমায়। সেখানেও হলুদ আর নীলের সাগর চোখে পড়ে। ফ্যান ফেস্টিভ্যালেও তাদেরই আধিপত্য। সেরা সমর্থকের লড়াইয়ে এবার আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলই থাকবে। অন্যরা কয়েক মাইল পেছনেই পড়ে থাকবে। আকাশি-নীল আর হলুদ জার্সির এই আধিপত্যের মধ্যে শঙ্কাও কম নয়। ফুটবল মাঝে-মধ্যে তার ভয়ংকর রূপও দেখিয়ে দেয়। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ হলে, সব ঠিক থাকবে তো! কাতারে অবশ্য ভয়ের তেমন কিছু নেই। এখানে নিরাপত্তারক্ষীরা বেশ কড়া। গোমড়া মুখের। একটু এদিক-ওদিক হলেই কড়া হুঁশিয়ারি দেয়। শুনতে না চাইলেই তেড়ে আসে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় সবাইকে। উঁচুদরের কেউ হলেও রক্ষা নেই। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা লড়াই নিরাপদ রাখাটা এমন কড়া বাহিনীর জন্যও কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে! বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল মুখোমুখি হয়েছে চারবার। ১৯৭৪ সালে দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিল জেতে ২-১ গোলে। ১৯৭৮ সালে দুই দল গোলশূন্য ড্র করে। ১৯৮২ সালে ব্রাজিল জেতে ৩-১ গোলে। ১৯৯০ সালে শেষ ষোলোতে আর্জেন্টিনা জেতে ১-০ গোলে। এরপর দীর্ঘ ২৮ বছর বিশ্বকাপে আর দেখা হয়নি দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী ফুটবল পরাশক্তির। এবারে কি দেখা যাবে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের ধ্রুপদী লড়াই! শিল্পের লড়াই! ফুটবলীয় লড়াই!

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,782FollowersFollow
20,800SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles