
স্টাফ রিপোটার -বেআইনী ও জনতাবদ্ধে গতিরোধ করে খুন করাসহ হুকুম দানের অপরাধে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৪ জনসহ মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহত সুমন গাজীর পিতা ইউসুফ আলী গাজী।
মামলায় আবদুল্লাহ আল মামুন অরফে বাবুকে প্রধান আসামী করা হয়। মামলা নং-২৬। মামলা দায়ের হওয়ার পর আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এর আগে বুধবার সুমনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে মরদেহ নিয়ে স্বজন ও এলাকাবাসী সুমন হত্যার বিচারের দাবীতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে।
উল্লেখ্য, ঢাকা সদরঘাট থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এমভি সোনারতরী-৩ লঞ্চের আসনে বসা নিয়ে কথা কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে যাত্রী বাবু আহমেদ ও তার সহযোগীরা সুমন গাজী (৩৩) নামে অপরযাত্রীকে ধারালো ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে আটক করেছে চাঁদপুর নৌ থানা পুলিশ। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে ৩ জন কে আটক করা হয়, তবে ১ জন পলাতক রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সোয়া ৫টায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতেল চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমনের মৃত্যু হয়। এর আগে রাত সাড়ে ১১টার দিকে চাঁদপুর ঘাটে লঞ্চ থেকে পল্টুনে নামলে ঘাটের বরিশাল হোটেলের মোড়ে বাবু ও তার সহযোগিরা সুমনকে দেশীয় অস্ত্র ও ছুরি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় বিকেলে চাঁদপুর নৌ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হয়।
হত্যার শিকার সুমন গাজী চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী গ্রামের স্বপন গাজীর ছেলে। পেশা একজন ফার্নিচারের রং মিস্ত্রি। বিবাহিত জীবনে তার কোন সন্তান নেই।
ঘটনায় জড়িত গ্রেফতারকৃতরা হলেন-মতলব চেঙ্গারচর পৌরসভা এলাকার বাসিন্দা একেএম সাহাবুদ্দিনের ছেলে বাবু আহমেদ প্রকাশ সুমন (২২), চাঁদপুর শহরের উত্তর শ্রীরামদীর হাসান আলীর ছেলে সবুজ প্রধানিয়া (২৩), একই এলাকার খোকন মোল্লার ছেলে সাজ্জাদ মোল্লা (২৩) শহরের ট্রাক রোড এলাকার নাছির উদ্দিন মাঝির ছেলে সাজ্জাদ হোসেন আপন (২২), রহমতপুর আবাসিক এলাকার বিল্লাল খানের ছেলে সবুজ খান (২১)। গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্য মতে গুনরাজদী এলাকার হাসান মাহমুদ সোহাগ (২১), রাকিব হোসেন গাজী ও ইয়ামিন (২২)।
নিহত সুমনের ভাই বড় ভাই শরীফ গাজী বলেন, আমরা ভাই রাতে লঞ্চে ঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। লঞ্চের মধ্যে বাবু নামে যাত্রীর সাথে লঞ্চের আসনে বসা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। লঞ্চে থাকা অবস্থায় বাবু তার সহযোগিদের ফোন করে ঘাটে আনে। আমার ভাই লঞ্চ থেকে নামলে তারা ৭ থেকে ৮জন মিলে দেশীয় অস্ত্র ও ছুরি দিয়ে কুপিয়ে আমার ভাইকে গুরুতর আহত করে।
সোমবার বিকেলে নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান সুমন হত্যার বিষয় নিয়ে প্রেসবিফ্রিং এ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।