
বাংলা স্টার আশুলিয়া প্রতিনিধি-মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদের শ্রদ্ধা জানাতে এসে বেদীর সামনে হুড়োহুড়ির ঘটনা ঘটেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে। এ সময় শহীদ বেদিতে ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করে নিজেদের হুড়োহুড়িতে ভেঙ্গে যায় তাদের শ্রদ্ধাঞ্জলির ফুলের ডালা। ধাক্কাধাক্কিতে বেদিতে উপর হয়ে কোনো রকমে নিজেকে সামলে নিতে দেখা যায় দলটির সিনিয়র নেতাকর্মীদের। নারী নেত্রীরাও পড়েন চরম বেকায়দায়।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে বিএনপির পক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফসহ দলটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
এ সময় বেদী পর্যন্ত যেতেই চরম বিশৃঙ্খলায় ধাক্কাধাক্কির কবলে পড়েন স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমানসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহরা। দলটির নারী নেত্রীদেরও চরম বেকায়দায় পড়তে দেখা যায়। বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ড. আব্দুল মইন খান পেছনের নেতা-কর্মীদের ধাক্কায় বেদির উপর ঝুঁকে পরেন৷ পরে বেদিতে দিতে আসা শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদনের সময় তা ভেঙ্গে দুই ভাগ হয়ে যায়। সেই ভাঙা শ্রদ্ধাঞ্জলিই বেদিতে অর্পণ করেন তারা। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েও চরম বিপাকে পড়েন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। স্লোগানের সঙ্গে বিশৃঙ্খলা আর ধাক্কায় সাংবাদিকদের যেন দাঁড়িয়ে থাকা দায় হয়ে পড়ে সেই সময়।
স্মৃতিসৌধে আসা গোলাম রাব্বানী নামে এক দর্শনার্থী বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা স্মৃতিসৌধে প্রবেশের পরেই বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। তাদের ধাক্কাধাক্কির কারণে আমি ও আমার সঙ্গীরা বেদিতে তখন যেতেই পারিনি। তারা চলে যাওয়ার পর শ্রদ্ধা জানিয়েছি। জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে এসে এধরণের বিশৃঙ্খলা ও আচরণ কাম্য না। গত বছরেও বিএনপির বিশৃঙ্খলার সময় অনেকের মোবাইল খোয়া গিয়েছিল। যেটা আমরা খবরে জানতে পেরেছি। এ সব বিষয়ে কর্তৃপক্ষকেও আরও সজাগ থাকা উচিত। যাতে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মহান বিজয় দিবসে শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে পারেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের এক গণমাধ্যমকর্মী জানিছেন, আমরা বিএনপির নেতাদের বক্তব্য ধারণ করতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। বরাবরের মতো কোনো রকম শৃঙ্খলা তাদের ছিল না। নেতাকর্মীদের স্লোগান আর ধাক্কাধাক্কিতে ক্যামেরাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকাটাও অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।
সাগর ফরাজী বলেন, আজ সকাল থেকেই বিএনপিসহ দলের অঙ্গ সংগঠনের ভিন্ন ভিন্ন ভাবে মিছিল নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসেছে। সেখানে যখন বিএনপির কেন্দ্রীয় দুই একজন নেতা সৌধ এলাকায় প্রবেশ করলো তখনই হুরোহুড়ি শুরু হয়েছে৷ নেতারা সামনে এসে সৌধের বেদীর সামনে হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। বেদির সামনে পৌঁছে যখন পুষ্পরপক বের করতে যায় তখনই পুষ্পস্তবকের মাঝখান থেকে ভেঙে আলাদা হতে শুরু করে। পরে সেই ভাঙা পুষ্পপরপক নিয়েই শ্রদ্ধা নিবেদন করে তারা।