
বাংলা স্টার অনলাইন-ইউক্রেনের যুদ্ধ সামনের দিনগুলোতে কীভাবে পরিচালিত হওয়া উচিৎ তা নিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর অধিনায়কদের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। টেলিভিশনে প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে প্রেসিডেন্ট পুতিন সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশন সদর দফতর পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অধিনায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
“আমরা অবিলম্বে এবং মধ্য-মেয়াদে যুদ্ধের কী কৌশল নেব, সে বিষয়ে আমি আপনাদের প্রস্তাব জানতে চাই,” বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
বিবিসি মনিটরিং জানাচ্ছে, শনিবার সারাদিন ধরে চলা এই বৈঠকে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর স্টাফ প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমফ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শইগু এবং ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সর্বময় অধিনায়ক জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিন।
ক্রেমলিনের একজন মুখপাত্র এরকম একটা চিত্র দেয়ার চেষ্টা করেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধে সব পরিকল্পনা মাফিকই চলছে, এবং সব কিছুই প্রেসিডেন্ট পুতিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
মস্কোর যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে ইউক্রেন
এর আগে মাত্র গতকালই ইউক্রেনের সরকার বলেছিল, নতুন বছরের শুরুতে মস্কো ব্যাপক আকারে হামলা চালানোর পায়তারা করছে।
রাশিয়া সম্প্রতি ইউক্রেনে একের পর এক পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে।
তবে রাশিয়ার উপর্যুপরি হামলাগুলোর পটভূমিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনে আরও জোরদার হামলা চালানোর জন্য রাশিয়ার হাতে এখনও পর্যাপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।
এজন্য রাশিয়া সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলকভাবে নতুন সেনা নিয়োগ করছে বলে কিয়েভ জানাচ্ছে।
রাশিয়া এখন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যে সর্বশেষ দফা লড়াই চালাচ্ছে, তাতে মূলত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন দিয়ে হামলা করা হচ্ছে।
এসব হামলায় মূলত জ্বালানি অবকাঠামোকে টার্গেট করা হচ্ছে এবং ইউক্রেনে এই প্রচণ্ড শীতে জ্বালানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
শুক্রবার রাশিয়া জ্বালানি অবকাঠামো টার্গেট করে ৭৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে জানিয়ে ইউক্রেন বলছে প্রকৌশলীরা গতকালের হামলার পর বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধার করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের অনেক অংশে আজ বিদ্যুৎ এবং ঘর গরম রাখার জ্বালানি নেই বলে জানানো হয়েছে।
হামলা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর পুতিনরুশ প্রেসিডেন্ট এমাসের গোড়ার দিকে বলেছিলেন রুশ হামলার সমালোচনা করে ইউক্রেনে তাদের “লড়াইয়ের মিশনকে” ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।ক্রেমলিনে সামরিক এক সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি বলেন: “হ্যাঁ, আমরা (অবকাঠামোর ওপর) হামলা চালাচ্ছি। কিন্তু কে এসব শুরু করেছে?”
তিন বলেন, ৮ই অক্টোবর রাশিয়ার সীমানাভুক্ত ক্রাইমিয়ার সাথে রুশ সংযোগ সেতুতে বিস্ফোরণ ঘটানোর জবাবে তারা এই হামলা চালাচ্ছেন।
তিনি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তোলেন যে কুরস্ক পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুতের লাইন ইউক্রেন বোমা দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে এবং পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্কে পানির সরবরাহ লাইন তারা কেটে দিয়েছে।
“দশ লাখের বেশি মানুষের শহরে পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া একটা গণহত্যার কাজ,” এ মাসের গোড়ায় বলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
তিনি বলেন তার প্রতিজ্ঞা, ইউক্রেনের অবকাঠামোর ওপর হামলা তারা অব্যাহত রাখবেন।তবে ইউক্রেন বলছে তারাও রাশিয়ার হামলার মুখে টিকে থাকার মত শক্তি দেখিয়েছে।তারা বলছে মস্কোর দখল থেকে ইউক্রেনের আরও অংশ মুক্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউক্রেনের বাহিনী।
গত দশ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে উভয় পক্ষই মারাত্মক ক্ষয়-ক্ষতির শিকার হয়েছে। এখন দুই পক্ষই আরও দীর্ঘ এক লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।