34 C
Bangladesh
Thursday, June 1, 2023
spot_img

বৃদ্ধা দাদিকে পেটাচ্ছেন পাষণ্ড নাতি ভিডিও করছেন মা!

বাংলা স্টার নিজস্ব প্রতিবেদক-বাড়ির সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জেরে সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা দাদিকে বেধড়ক পেটালেন নিজের পাষণ্ড নাতি। আর এ ঘটনার সময় শাশুড়িকে রক্ষা না করে ছেলের পক্ষ নিয়ে ভিডিও ধারণ করে শাসালেন পুত্রবধূ (ওই যুবকের মা)।

ঘটনাটি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর লস্করপুর এলাকার। মারধরের শিকার ওই বৃদ্ধা লায়লী বেগম পৌর এলাকার উত্তর লস্করপুর গ্রামের বাসিন্দা। আর মারধরকারী যুবক বৃদ্ধার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী জয়নাল মিয়ার ছেলে। সে সিলেট এমসি কলেজে অর্থনীতি বিভাগে অনার্সে পড়াশোনা করছে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় মারধরকারী নাতি আব্দুস সামাদসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে রোববার রাতে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বৃদ্ধা লায়লী বেগম।

পুলিশ বলছে, অভিযোগ পেয়ে আদালতে প্রসিকিউশনের জন্য পাঠানো হয়েছে। আদালতের অনুমতি পেয়ে অভিযোগটি মামলায় এজাহারভুক্ত করা হবে।

ভিডিও ও থানায় লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, পৌর এলাকার উত্তর লস্করপুরের বাসিন্দা মৃত সুলতান মিয়ার স্ত্রী লায়লী বেগমের দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছেন। বড় ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী জয়নাল মিয়া কয়েক বছর আগে মা লায়লী বেগমের নামে থাকা সম্পত্তি সমান অংশে ভাগবাটোয়ারা করার কৌশল দেখিয়ে ৫.৪১ শতক জমি নিজের নামে লিখে নেন। পরে বৃদ্ধা মায়ের দেখভাল না করে জয়নালের স্ত্রী আমিনা বেগম বোনদের (বৃদ্ধার মেয়েদের) ঘরে দিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার শালিসি বৈঠকও হয়। গত শুক্রবার জয়নালের ছেলে ও বৃদ্ধার নাতি আব্দুস সামাদ বাড়িতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজ শুরু করেন। এতে বাধা দিতে যান বৃদ্ধা লায়লী বেগম। তখন সামাদ উত্তেজিত হয়ে তার মা আমেনাসহ তাদের আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে লায়লী বেগমের ওপর চড়াও হোন। একপর্যায়ে সামাদ তার দাদিকে টেনে হিঁচড়ে এলোপাতাড়ি লাথি-ঘুষি দিতে থাকেন এবং ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। কিন্তু পরিবারের কেউ এসে তাকে রক্ষা করেনি।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, লায়লী বেগমকে তখন সামাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা কেউ উদ্ধার না করে উল্টো টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ওই সময় সামাদের মা আমেনা শাশুড়িকে উদ্ধার না করে উল্টো ভিডিও ধারণ করে বৃদ্ধার মেয়েদের শাসিয়ে বলেন, ‘মেয়েরা কেন সেখান থেকে লায়লী বেগমকে সরিয়ে নিচ্ছে না। সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বাধা দিতে মেয়েরা লায়লী বেগমকে পাঠিয়ে তামাশা দেখছে।’

মঙ্গলবার বিকেলে অভিযুক্ত নাতি আব্দুস সামাদ বলেন, গত ৯ মাস ধরে জায়গা নিয়ে দাদির সঙ্গে আমাদের পারিবারিক বিরোধ চলছে। প্রায় ৯ বছর ধরে আমার দাদির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নেই। তিনি আমার ফুফুদের কাছে আছেন। এই ফুফু ও আমার দাদির ভাইদের কারণে বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে না। আমাদের জায়গার ওপর দেয়াল নির্মাণ করতে গেলে দাদি ও আমার ফুফুরা এতে বাধা দেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়। শুক্রবার দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করলে দাদি বাধা দিতে আসেন। এ জন্য তাকে সরিয়ে দিয়েছি, কোনো মারধর করিনি। তবুও এ ঘটনায় আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,790FollowersFollow
20,800SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles