
বাংলা স্টার রিপোটার- সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) ড. আজিজ আহমেদ বলেছেন, ১৯৭১ সালে আমি পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ছিলাম। আমি যুদ্ধের সময় দাদা বাড়িতে এসে থেকে যেতে হয়েছে। তখন সংবাদ জানার মাধ্যম ছিল রেডিও। যার মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত ঘটনার শুনা যেত। আসলে আমার তখন বয়স ছিলনা, তাই মুক্তিযুদ্ধে যাওয়া হয়নি। সেটা আমার জীবনের অপ্রাপ্তি ছিল। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে থাকতে পেরে আমি এখন গর্বিত।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চাঁদপুর বিজয় মেলার বঙ্গবন্ধু মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক সেনা প্রধান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অনেক জায়গা আমরা বের করতে পারি নাই। একটি স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে গিয়ে তা শুনতে পেলাম একজন মুক্তিযোদ্ধার ঘটনা। শুনে অবাক হয়েছিলাম। পরে মুক্তিযুদ্ধের সেই স্থান সংরক্ষণ করেছিলাম।
তিনি বলেন, আমি কিছু করার চেষ্টা করেছিলাম বিজিবি ও সেনা প্রধান থাকাকালীন সময়ে। তবে মুক্তিযোদ্ধারা যা করেছেন তা কিছু নেই।
নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে সাবেক এই সেনা প্রধান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে জানতে হবে। এখনো খারাপ লাগে মুক্তিযোদ্ধার ঘোষণা নিয়ে যখন বিতর্ক করে। এতে বিতর্কের কিছু নেই জাতির পিতার আহবানেই মুক্তিযোদ্ধে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা যারা বেঁচে আছেন তাতেরকে সম্মান করতে হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে আহবান থাকবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যখন যেখানেই দেখবো সম্মান করবো এবং শ্রদ্ধা করবো।
চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার চেয়ারম্যান বীর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা লে. (অব.) এম এ ওয়াদুদ এর সভাপতিত্বে প্রধান স্মৃতিচারকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী কৃষক লীগের সহ-সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর লোক। আমাদের রক্তে তা প্রবাহিত হয়। আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র তুলেছিলাম। আমরা যারা যুদ্ধে গিয়েছিলাম তখন চিন্তা করি নাই যে বেঁচে থাকবো। আমাদের ত্যাগ ও সাহসীকতায় স্বাধীনতা পেয়েছি।
তিনি বলেন, আমাকে ১৭ নম্বর সেলে রাখতো। আমি নাকি বিপদজনক ছিলাম। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে আমাদের জেলে ডুকালেন। এরশাদও কম কিছু করেনি। আমাদের জীবন ও যৌবন মানুষের মুক্তির জন্যে। এদেশের মানুষের যেন উন্নয়ন হয়।
স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিজয় মেলার মহাসচিব হারুন আল রশিদ।
চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শাহাদাত হোসেন সাবু পাটোয়ারী, ডেপুটি কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম বরকন্দাজ, সহকারী কমান্ডার মহসীন পাঠান, ইয়াকুব আলী মাস্টার, মৃনাল কান্তি সাহা, ফরিদগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সহিদুল্লাহ তপাদার, মতলব উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বসির উল্লাহ সরকার, পুরান বাজার ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার প্রমুখ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক সেনা প্রধান স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে এসে প্রথমেই বিজয় মেলা কমিটি উদ্যোগে স্থাপতি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষন গ্যালারী পরিদর্শন করেন।