29 C
Bangladesh
Sunday, October 1, 2023
spot_img

মেট্রোরেলে আনন্দ ভ্রমণ দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের ঢল

বাংলা স্টার প্রতিবেদন -ছুটির দিন শুক্রবারও মেট্রোরেলে চড়েছেন কয়েক হাজার যাত্রী। তবে দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে মেট্রোতে চড়তে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন অনেকে। দূর-দূরান্ত থেকেও মেট্রোরেলে চড়তে এসে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা। মেট্রোরেলে চলাচলের সময় আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা। আর দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর যারা মেট্রোরেলে চড়তে পেরেছেন তাদের খুশির অন্ত ছিল না। 

বেশিরভাগ যাত্রী বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজন নিয়ে মেট্রোরেলে চড়েছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে হতাশা ও আতঙ্কের মধ্যেও মেট্রোরেল রাজধানীবাসীর মধ্যে খুশির জোয়ার সৃষ্টি করেছে। 

সরেজমিন দেখা যায়, মেট্রোরেলে চড়তে দ্বিতীয় দিন ভোরে উত্তরা ও আগারগাঁও স্টেশনে টিকিটের জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাইন আরও দীর্ঘ হয়। প্রথম দিন যারা মেট্রোতে চড়ার স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন দ্বিতীয় দিন তাদের অনেকে চড়তে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সময় কম হওয়ায় এদিনও সব যাত্রী পরিবহণ করাতে পারেনি মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। 

মেট্রোরেলে যাত্রী এবং সংশ্লিষ্টরা জানান, শুক্রবার টিকিট কাটতে ‘অফিস মেশিনের (টিওএম) চেয়ে টিকিট ভেন্ডিং মেশিনে (টিভিএম) আগ্রহ ছিল যাত্রীদের। তারা নিজে নিজে টাকা প্রবেশ করিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যার ফলে প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ মানুষ টিভিএমের সামনে এবং এক ভাগ মানুষ টিওএম অফিসের সামনে ভিড় করতে দেখা গেছে। মেট্রোরেলে চড়া যাত্রীদের নিয়ে উত্তরা ও আগারগাঁও স্টেশনের পাশ থেকে বিআরটিসি’র বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়। 

দ্বিতীয় দিনও দুপুর ১২টা বাজার আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয় মেট্রোরেল প্রবেশের মূল গেট। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন বাইরে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা। সকাল থেকে অপেক্ষার পর মেট্রোরেলে চড়তে না পারায় ক্ষোভে মূল গেটে ধাক্কাধাক্কি করেন অনেকেই। কেউ কেউ আবার গেট টপকে স্টেশনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দিয়াবাড়ী স্টেশনে টিকিটবঞ্চিতদের বোঝাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মেট্রোরেল কর্মীদের পাশাপাশি ভূমিকা রাখেন।

মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাত্রীদের অনেকে জানান, মেট্রোস্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই ঢিলেঢালা। প্রবেশমুখগুলোয় নিরাপত্তা তল্লাশির জন্য মেটাল ডিটেক্টর নেই। ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করলেও তল্লাশি কিংবা স্ক্যান করার ব্যবস্থা নেই। বিপুল অর্থ খরচ করে সরকার দ্রুতগতির গণপরিবহণের যুগে নিয়ে গেছে দেশকে। দেশের এই সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব সবার। নিরাপত্তার বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডকে (ডিএমটিসিএল) আরও সতর্ক হওয়া দরকার।

এ ব্যাপারে ডিএমটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক জানান, মেট্রোরেলের চলাচল মাত্র শুরু হলো। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি দেখভাল করছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। 

আগারগাঁও স্টেশন হয়ে মেট্রোরেলে চড়তে আসা রেজাউল করিম জানান, সকাল ৯টায় তিনি লাইনে দাঁড়ান। তার পেছনে থাকা ৪ শতাধিক যাত্রী স্টেশনের ভেতর প্রবেশ করতে পারেননি। এখন মেট্রোরেলে ভ্রমণের সুযোগ না পেয়ে আপেক্ষ নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন তিনি।

মাহমুদুর রহমান নামে আরেকজন বলেন, ‘ইচ্ছা ছিল ছুটির দিনে মেট্রোরেলে উঠব। কিন্তু স্বপ্নপূরণ হলো না। প্রায় ২ ঘণ্টা লাইনে থেকেও স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করতে পারলাম না। জানি না কবে ইচ্ছেটা পূরণ হবে।’

বিজয়ের মাসে প্রধানমন্ত্রীর উপহার মেট্রোরেল : এদিন সকালে মহাখালী প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে নানা প্রতিকৃতির প্রদর্শনী শেষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিজয়ের মাসে আমাদের মেট্রোরেল উপহার দিয়েছেন। কিছুদিন আগেই পদ্মা সেতু উপহার দিয়েছেন। এগুলো জনগণের সম্পদ। এই সম্পদ পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সবার। দয়া করে মেট্রোরেল পরিষ্কার রাখুন, ট্রেন, বাথরুম, প্ল্যাটফর্ম পরিষ্কার রাখুন। আমরাই তো ব্যবহার করব। এর সুফল তো আমরাই পাব। এটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের দায়িত্ব।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,876FollowersFollow
21,200SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles