
বাংলা স্টার চাঁদপুর রিপোট- চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের একটি গ্রাম দক্ষিণ আশিকাটি। এ গ্রামের একটি পরিচিত স্থান চৌধুরী দিঘি। এ দিঘিটির কোল ঘেঁষা ছিল চার একরের উপরে একটি জমিদার বাড়ি। বাড়িটি প্রায় সত্তর বছর পূর্বে স্থানীয় হাফেজ খান, সালামত খান ও মালেক খানের কাছে বিক্রি করে তৎকালীন ভারতে চলে যান যুগেশ চৌধুরী। সেই বাড়ির পাশেই ছিল একটি রহস্যজনক পাথর।
রবিবার (৮ জানুয়ারি) রাত ১২টার পর যেকোন সময় কে বা কাহারা এই পাথরটি চুরি করে নিয়ে যান। সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকালে বাড়ির বাসিন্দারা পাথরটি দেখতে না পেয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
জানা যায়, দক্ষিণ আশিকাটির চৌধুরী দিঘিটি এক সময় অত্যন্ত বেশ পরিচিতি থাকলেও বর্তমানে তার বেশিরভাগই ভরাট হয়ে গেছে।
আশিকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাঈদুর রহমান সাজু খান নামে উক্ত চৌধুরী বাড়ির এক অংশীদার এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা এ বাড়িটি প্রায় ৭০ বছর আগে ক্রয় করি। এর আগে থেকেও এখানে পাথর ছিল। যার ওজন প্রায় ৮-১০ মন। এটি সহজে কেউ সরাতে পারতো না। আমরা মুরব্বিদের কাছ থেকে শুনে আসছি, জমিদাররা থাকা অবস্থায় রাতের বেলায় এ দিঘি থেকে সাতটি পাথর উপরে উঠে। পরে দিনের বেলায় আবার দিঘিতে নামার সময় যুগেশ চৌধুরী দেখতে পান এবং একটিতে আঘাত করলে সেটি আর নামতে পারেন নি। অন্য ছয়টি চলে গেলেও আঘাত করা পাথরটি এখানেই আটকে যায় এবং এখানেই অবস্থান নেয়। তিনি আরো জানান, এই পাথরটি একসময় তিনজন লোক কড়াত দিয়ে কাটতে গেলে তারা নাকে মুখে রক্তক্ষরণ হয়ে মারা যান। পাথরটিতে সেই কড়াত দিয়ে কাটার দাগ এখনো আছে। তবে পাথরটি চুরি হওয়ার বিষয়টি চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশকে অবগত করার চেষ্টা করছি।
নন্দ দুলাল শীল নামে এক প্রতিবেশী বলেন, আমরা ছোট বেলা থেকেই এই পাথরটি দেখে আসছি। এটি নিয়ে আমরা কয়েকজন খেলাধুলাও করতাম। কিন্তু আজ (সোমবার) সকালে শোনার পর খুব আপসোস লাগছে। আমাদের পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে শোনা এই পাথরের রয়েছে ব্যাপক ইতিহাস। যারাই এটি চুরি করেছে তাদেরকে শনাক্ত করা প্রয়োজন। এদিকে পাথরটি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মিজান মালের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৮-১০ মন ওজনের এই পাথরটিতে একসময় হিন্দুরা পূজা করতো। কেউ কেউ মানতও করতো। রোববার রাতে পাথরটি চুরি করতে গিয়ে টেনে নিয়ে গাড়িতে তোলার দাগ রয়েছে মাটির মধ্যে। যারাই করছে কমপক্ষে ৫-৭ জন মিলেই করেছে এ কাজটি।
রহস্যজনক এ পাথরটি যারাই চুরি করেছে তাদেরকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের সু দৃষ্টি কামনা করছেন চৌধুরী বাড়ির বর্তমান বংশধরসহ এলাকাবাসী।